মাহে রমজানের ফজিলত
রমজান মাস হলো ইসলামের পবিত্রতম ও বরকতময় মাস। এটি আত্মশুদ্ধি, ইবাদত ও তাকওয়া অর্জনের সর্বোত্তম সময়। মহান আল্লাহ্ এই মাসকে অন্যান্য মাসের চেয়ে বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন এবং এই মাসে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে।
রমজানের ফজিলত ও গুরুত্ব:
পবিত্র কুরআন নাজিলের মাস:
রমজান মাসেই মহান আল্লাহ তাঁর শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ আল-কুরআন নাজিল করেছেন। আল্লাহ বলেন—
"রমজান মাসই হলো সে মাস, যাতে নাজিল করা হয়েছে কুরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্য পথের সুস্পষ্ট নিদর্শন ও ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্যকারী।" (সূরা আল-বাকারা: ১৮৫)
রোজা ফরজ করা হয়েছে:
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি হলো রোজা। মহান আল্লাহ বলেন—
"হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।" (সূরা আল-বাকারা: ১৮৩)
শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়:
হাদিসে এসেছে, “যখন রমজান মাস আসে, তখন জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদেরকে শৃঙ্খলিত করা হয়।” (বুখারি ও মুসলিম)
লাইলাতুল কদরের বরকত:
এই মাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাত লাইলাতুল কদর, যা হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম। মহান আল্লাহ বলেন—
"নিশ্চয়ই আমি একে (কুরআন) লাইলাতুল কদরে নাজিল করেছি। তুমি কি জানো লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।" (সূরা আল-কদর: ১-৩)
গুনাহ মাফ ও জান্নাতের সুসংবাদ:
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন—
“যে ব্যক্তি ঈমান ও ইখলাসের সাথে রমজানের রোজা রাখে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (বুখারি ও মুসলিম)
দোয়া কবুলের বিশেষ সময়:
রমজানে রোজাদারের দোয়া বিশেষভাবে কবুল হয়। রাসুল (সা.) বলেন—
“তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না: ন্যায়পরায়ণ শাসকের, রোজাদারের ইফতারের সময়ের, এবং মজলুমের।” (তিরমিজি)
সদকাহ ও দানের বিশেষ সওয়াব:
রমজানে দান-সদকার ফজিলত অনেক বেশি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলতেন—
“এটি ধৈর্যের মাস, আর ধৈর্যের প্রতিদান হলো জান্নাত। এটি সহানুভূতির মাস, আর এটি এমন মাস যাতে মুমিনের রিজিক বৃদ্ধি করা হয়।” (ইবনে খুজাইমা)
উপসংহার:
রমজান মাস আত্মশুদ্ধি, ইবাদত ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের শ্রেষ্ঠ সময়। এই মাসে রোজা রাখা, কুরআন তিলাওয়াত করা, নামাজ আদায় করা, দান-সদকা করা এবং গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা আমাদের কর্তব্য। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে রমজানের ফজিলত অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।